সোমবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১০

হালাল রুজির সন্ধানে

ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন ফরজ ইবাদত হল হালাল রুজির সন্ধান করা। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলিয়াছেন,অন্যান্য ফরযের সঙ্গে হালাল কামাইয়ের ব্যবস্থা গ্রহনও একটি ফরয। (বায়হাকী) এ প্রসংগে আল্লাহতায়ালা রাসূলগণকে যেই আদেশ করিয়াছেন মুমিনগণকেও সেই আদেশ করিয়াছেন যথাঃ "হে রাসূলগন আপনারা পাক পবিত্র হালাল খাদ্য খাইবেন এবং নেক আমল করিতে থাকিবেন। মুমিনগনকেও লক্ষ্য করিয়াও তদ্রুপই বলিয়াছেনঃ "হে মুমিনগন! আমার দেয়া পাক পবিত্র হালাল রিযিক হইতে খাও। আর ইবাদতের পূর্ব শর্ত হল হালাল রুজি। হারাম দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করে ইবাদত করলে সেই ইবাদত কবুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) উল্লেখ করিলেন এক ব্যক্তি দুর দুরান্তের সফর করিতেছে (মুসাফিরের দোআ সাধারনত বেশি কবুল হয়) তাহার মাথার চুল এলোমেলো শরীরে ধুলা বালু (অর্থাৎ করুন অবস্থা যাহার দোআ সহজে কবুল হয়) এমতাবস্থায় ঐ ব্যক্তি উভয় হস্ত আসমানের দিকে উঠাইয়া হে প্রভু! হে প্রভু! বলিয়া ডাকিতেছে কিন্তু তাহার খাদ্য হারাম পানীয় হারাম পরিধেয় বস্ত্র হারাম্‌ (অর্থাৎ সবই হারাম উপায়ে উপার্জিত) এবং সেই হারামই সে খাইয়া থাকে এই ব্যক্তির দোআ কিরুপে গৃহীত হইতে পারে (মুসলিম)।
আজকাল আমরা অনেকেই বিভিন্ন পেশায় জড়িত। আর এদের মাঝ থেকে অনেকেই আল্লাহ তায়ালার হুকুম পালনে খুবই সচেষ্ঠ। অনেকেই নামাজ রোজার খুবই পাবন্দি, আমরা কি কোন একটা পেশা গ্রহন করার আগে একবার ভেবে দেখেছি আমার এই পেশাটা হালাল কিনা কিংবা ত্রুটিমুক্ত কিনা? আলোচ্য প্রবন্ধে বেশ কিছু পেশা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে যা শরীয়তসম্মত নয় এবং ত্রুটিযুক্ত। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসাউদ (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলিয়াছেন "যে কোন বান্দা হারাম উপায়ে উপার্জিত অর্থ দান খয়রাত করিলে তাহা কবুল হইবে না এবং উহা (নিজ কার্য) ব্যয় করিলে বরকত হইবে না আর ঐ ধন তাহার উত্তরাধিকারীদের জন্য রাখিয়া গেলে উহা তাহার জন্য দোযখের পুজিঁ হইবে। এরপরও আমরা যদি সতর্ক না হই তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
প্রথমেই বলা যাক সুদ নিয়ে। হাদিসে আছে "সুদের সত্তর ভাগের ক্ষুদ্রতম ভাগ এই পরিমান যে কোন ব্যক্তি মাতাকে বিবাহ করে"। কিন্তু আজ আমরা অনেকেই এর সাথে সরাসরি জড়িয়ে যাচ্ছি। প্রায়ই আমরা টাকা ঋন দিয়ে থাকি সুদের উপর। কেউ আবার লাভ এর উপর টাকা ঋন দেয়। সঠিক মাসআলা না জানার কারনে লাভ হয়ে যায় সুদ। অনেকে। অবশ্য জানার চেষ্ঠাও করে না। অতিরিক্ত টাকা হাতে আসলেই হলো। কিভাবে এলো তা নিয়ে কেউই মাথা ঘামায় না এটাতো গেল ব্যক্তিগত পর্যায় আর বিভিন্ন রকম প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা সুদের কারবার করে। বর্তমানে বিভিন্ন মাল্টিপারপাস প্রতিষ্ঠান এর আওতাভুক্ত। এর মধ্যে অনেকে অবশ্য তাদের ঋন দেয়ার প্রক্রিয়া শরিয়ত সম্মত উপায়ে দিয়ে থাকে। কিন্তু অনেকেই পূর্বের অবস্থায় রয়েছে। অনেকে এ ব্যপারে জানেই না। আবার অনেকে জেনেও গুরুত্ব দেয় না। আমরা আজকাল অনেকেই এই মাল্টিপারপাস এর মোড়কে বিভিন্ন রকম সমিতিও রয়েছে। তারা বিভিন্ন রকম ঋন দিয়ে থাকে আর এই সুদের টাকা কালেকশন করার জন্য প্রতিদিন তাদের কালেকশন বাহিনী সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। বর্তমানে সুদের ব্যাপকতা এত বেশি পরিমানে বেড়ে গিয়েছে যে কদম ফেলার কোন জায়গা নেই। এ প্রসংগে হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলিয়াছেন "লোকদের উপর এমন এক যুগ আসিবে যখন (সুদী কারবার ব্যাপক হইয়া পড়িবে এমন কি) একটি লোকও সুদের ব্যবহার হইতে অব্যহতি পাইবে না। সে সরাসরি না খাইলেও সুদের ধোয়া বা ধুলা তাহাকে স্পর্শ করিবে। (আহমদ, আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ) কিছু ব্যাকিং প্রতিষ্ঠান আছে যারাতো সরাসরি তাদের সুদের কথা কিছু ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান আছে যারাতো সরাসরি তাদের সুদের কথা ঘোষনা দিয়ে থাকে। হযরত আলী (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে অভিশাপ করিতে শুনিয়াছেন - সুদখোরের প্রতি এবং সুদ প্রদানকারীর প্রতি এবং সুদের ঋনপত্র লিখকের প্রতি। তো আমরা যারা এই সুদের হিসাব রাখছি বা কাউকে সুদ প্রদান করছি তারা কি কখনো ভেবে দেখেছি আদৌ এই পেশা ত্রুটিমুক্ত কিনা। আজকাল আমরা এই সব প্রতিষ্ঠানকে তাদের অফিস খোলার জন্য আমাদের মার্কেট বা বাসা ভাড়া দিয়ে থাকি। সুদী প্রতিষ্ঠানকে তাদের কারবার করার জন্য এভাবে ভাড়া দেয়া কোন ক্রমেই জায়েজ নেই। এই ভাবে উপার্জনও বৈধ বলে বিবেচিত হবে না। তাই বাসা বা মার্কেট ভাড়া দেয়ার আগে অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে তা কাকে ভাড়া দিচ্ছি।
লটারী বিক্রি
তাছাড়া এই জাতীয় আরো একটি পেশা আমরা অনেকে গ্রহন করছি, তা হলো বিভিন্ন তহবিল এর নামে লটারী বিক্রি। ঘোষনা দিয়ে এই জুয়ার কাজ চলে। আমরা অনেকেই জুয়ার নাম শুনলেই নাক সিটকাই। আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রায়ই দোয়া করি ছেলে মেয়েদেরও খুবই কড়া ভাষায় নিষেধ করি কখনো যেন তারা জুয়ায় জড়িয়ে না পড়ে, কিন্তু অদ্ভুদ হলেও সত্য আমরা নিজেরাই অবলীলায় এই লটারী নামক জুয়ায় জড়িয়ে পড়ছি। প্রকাশ্যে চলছে এই কার্যক্রম। প্রশাসন জুয়ায় ব্যাপারে খুবই কড়া থাকলেও লটারীর ব্যাপারে তারাই অনুমতি দিচ্ছে অবলীলায়। বিভিন্ন রকম মেলায় চলছে বিভিন্ন রকম জুয়া কেউ বিভিন্ন রকম পণ্যের মাধম্যে জুয়া খেলছে আবার কেউ সরাসরি টাকার মাধ্যমে। অবিশ্বাস্য ভাবে আজ মুসলিম উম্মাহ জড়িয়ে পড়ছে এই সব জঘন্য অপকর্মে।
প্রাইজবন্ড
এরকমই আরো একটি সুদ হল প্রাইজবন্ড। এই প্রাইজবন্ড এর ব্যাপারে আমরা এতই অজ্ঞ যে সবাই কম বেশি এই প্রাইজবন্ড কিনে ঘরে রাখি। এটা অনেকটা লটারীর মতই তবে এতে মূলধন ফেরত পাওয়ার আশা নেই বিধায় এটা জুয়া। কিন্তু আমরা দুনিয়ার মোহে পড়ে বেশি টাকা পাওয়ার আশায় সুদের সাথে জড়িয়ে পড়ছি। তবে আশার বিষয় মানুষ ইদানিং প্রাইজবন্ড থেকে কিছুটা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি। কিন্তু আমরা আবার নতুন করে অন্য এক সুদে জড়িয়ে পড়েছি। তা হলো ডি.পি.এস অনেক ব্যাংক তাদের প্রক্রিয়া শরীয়াহ মোতাবেক বলে দাবী করে। আমি তাদের প্রক্রিয়া জানিনা বিধায় এ নিয়ে বিতর্ক করব না। এ ব্যাপারে শাইখুল ইসলাম আল্লামা ত্বকী উসমানীর লেখা ইসলামী ব্যাংকিং ও বুনিয়াদ কিতাবটির বাংলা অনুবাদ পড়ে দেখা যেতে পারে। তবে অনেক ব্যাংক সরাসরি তাদের সুদের কথা সরাসরি প্রচার করে থাকে। তাই এ ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রশ্ন তোলা যায় যেহেতু তারা প্রকাশ্যে এ বিষয়টি প্রচার করছে। আজকাল এমন লোক খুজেঁ পাওয়া মুশকিল যার কোন না কোন ব্যাংকে ডি.পি.এস নেই। কিন্তু আমরা এই ডি.পি.এস খোলার আগে কখনো বিশ্লেষন করে দেখেছি কি আদৌ এটা শরীয়ত সম্মত পন্থায় আছে কিনা। কেউ শরীয়ত সম্মত উপায়ে বললেই আমাদের তাতে গা ভাসিয়ে দেয়াটা বোকামী ছাড়া কিছুই না। যদি এ নিয়ে কোন প্রশ্ন না উঠত তবে কিছু্‌ই বলার ছিল না। আজ মুসলমান অর্থের নেশায় এতটাই বিভোর হয়ে রয়েছে যে তারা শুধু উপার্জন এর ক্ষেত্রে নয় জীবনের কোন ক্ষেত্রেই হারাম হালাল এর তোয়াক্কা করে না। কিভাবে বিত্ত বৈভব এর মালিক হওয়া যায় কিভাবে সমাজের উচু স্তরে যাওয়া যায় এই প্রতিযোগীতায় ব্যাপকভাবে লিপ্ত। এ প্রসংগে একটি হাদিস হযরত আবু হুরায়রা হইতে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলিয়াছেন - মানুষের সম্মুখে এমন এক যুগ আসিবে যে কেহই পরওয়া করিবে না - কি উপায়ে মাল লাভ করিল হারাম উপায়ে না হালাল উপায়ে (বুখারী)। বাস্তবতা আজ তাই মানুষ আজ এতটাই পেশাদার হয়ে গেছে যে কোন কাজ করতে গেলেই আগে লাভ এর কথা চিন্তা করে। অদ্ভুদ লাগে কেউ শুধুমাত্র সওয়াবে নিয়তে একটা কদম ফেলবে তাও তারা রাজি না। কিন্তু সাহাবীদের জীবনী দেখি হযরত সালমান ফারসী (রাঃ) ছোট ছোট বাচ্চাদের পিছনে ঘুরতেন এবং তাদের কাছ থেকে খাচায় বন্দী পাখি ক্রয় করে মুক্ত করে দিতেন। কেন এই কাজ করতেন? এই যামানায় এই কাজ কেউ করলে তাকে পাগল ছাড়া কিছুই বলবে না।
গান গাওয়া ও নাচ
যা হোক আজকাল গান গাওয়া ও নাচ দেখানোকে খুবই সম্মান জনক পেশা হিসাবে দেখা হয়। আমাদের সমাজে অনেকেই তাদের ছেলে মেয়েদেরকে ছোটবেলা থেকেই গান ও নাচ শিখিয়ে থাকেন এ ব্যাপারে জাতীয় ও বেসরকারী পর্যায়ে বড় বড় প্রতিযোগীতা হয় এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানিত করা হয়। অভিভাবকরাও সন্তানদেরকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করান কিংবা শিক্ষক রেখে শিক্ষা দিয়ে থাকেন। অনেকেই সপ্ন দেখে গান গেয়ে তার ক্যারিয়ার গড়ে তুলবে। হযরত জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন - রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন গান মানুষের অন্তরে এমনভাবে মুনাফেকী সৃষ্টি করে যেমন পানি শস্য উৎপাদন করে (বায়হাকী, মিশকাত)। বর্তমানে বেশির ভাগ মানুষের মধ্যে মুনাফেকীর লক্ষন পাওয়ার এটি অন্যতম কারন কেউ যদি কাউকে কোন বিষয়ে ওয়াদা করে নির্দ্বিধায় সে তা ভঙ্গ করে, কথায় কথায় মিথ্যা বলে আর আমানতের খিয়ানত করে। প্রসঙ্গতঃ এই গান শিক্ষা দেয়া গান গাওয়া বা বাদ্যযন্ত্র শিক্ষা দেয়া বা বাজানোকে পেশা হিসাবে নেয়া সম্পূর্ন হারাম। রাসূলের যামানায় এক লোক রাসূলের কাছে ঢোল বাজিয়ে জীবিকা নির্বাহ করার অনুমতি চাইলে রাসূল তার উপর ভীষন হয়েছিল। আর আজ আমরা ব্যাপকভাবে বাদ্য যন্ত্রের ব্যবহার শিখে ফেলেছি। অনেক লোক আছে যারা আজ বাদ্য যন্ত্র বাজিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। আফসোস মানুষ আজ এই পেশাকে হালাল মনে করছে। নির্ধিদ্বায় তারা আজ এই সব পেশায় নিজেদের জড়িয়ে দিচ্ছে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন - আমার উম্মতের মধ্য হইতে এমন একদল লোকের আবির্ভাব ঘটবে যারা রেশম মদ ও বাদ্যযন্ত্র হালাল মনে করবে (ইবনে মাজাহ)। বস্তুতঃ আজ তাই মানুষ আজ এই পেশাকে সম্পূর্ন হালাল মনে করছে। অন্য এক হাদিসে হযরত আবু উমামা (রাঃ) হইতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলিয়াছেন তোমরা গায়িকা ক্রয় করিও না উহার মূল্য হারাম তাহাদেরকে গান শিক্ষাও দিও না (তিরমিযী, ইবনে মাযাহ)। এই শ্রেনীর কার্য যাহারা করে তাহাদের সম্পকেই পবিত্র কোরআনের এই আয়াত নায়িল হইয়াছে - এক শ্রেনীর লোক আছে যাহারা রং তামাশার গাথা (তথা গান) ক্রয় করে (তাহাদের জন্য লাঞ্চনাময় আযাব রহিয়াছে) উক্ত হাদিসে এ গান শিক্ষা দিতে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু আজ এর ব্যাপকতা এত বেশি পরিমানে বেড়ে গিয়েছে যে একটা মুহূর্ত নেই গানের আওয়াজ কানে না আসে। আধুনিক মোবাইল সবার হাতে চলে আসাতে গান ছাড়া একটা মুহূর্ত মানুষ কল্পনা করতে পারে না। মানুষ আজ লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করছে শুধুমাত্র এই গান গেয়ে,নাচ দেখিয়ে।
এতো গেল গান গাওয়ার বিষয়। গান গাওয়ার তুলনায় গান বিক্রিও প্রতিযোগীতা তো অনেক বেশী। জায়গায় জায়গায় বিভিন্ন সিডি, ডিভিডি ক্যাসেট বিক্রির দোকান গড়ে উঠেছে। বড় বড় মার্কেট এ বিশাল বিশাল দোকান গড়ে উঠেছে শুধুমাত্র এই ধরনের ক্যাসেট বিক্রির। এই বিক্রির মধ্যে দুই ধরনের ক্ষতি এক হল তার উপার্জন হারাম হল আর দ্বিতীয়ত গুনাহের কাজে সহযোগীতা করা। যখন এই সকল ক্যাসেট নিয়ে গান শোনা হবে তখন গুনাহর কাজে সহযোগীতা করার কারনে বিক্রেতার আমলনামায় গুনাহ লেখা হবে। এরকম ভাবে যত বিক্রি হবে এবং শোনা হবে তার আমালনামায় তত পরিমান গুনাহ বাড়তে থাকবে। এরকমই আরেকটি উপার্জন বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় তা হলো কম্পিউটারের মাধ্যমে বিভিন্ন গান ও এই জাতীয় জিনিস সিডি রাইট করে দেয়া। এছাড়া মোবাইলে এই জাতীয় বিভিন্ন জিনিস সহ অশ্লিল ছবি আপলোড করা যা সম্পূর্ন রুপে হারাম। তাই এ কাজ থেকে অর্থ উপার্জন করাও হারাম এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে যে মানুষ আজ গুনাহের কাজকে গুনাহ মনে করে না। গুনাহর কাজকে গুনাহ মনে না করাও এক ধরনের কুফুরী। কিন্তু আজ আমরা অবলীলায় এই সকল কাজ করে যাচ্ছি। এতে সামাজিক দিক থেকেও ব্যাপক অবক্ষয় হচ্ছে। ছোট ছোট বাচ্চারাও পর্যন্ত আজ এই স্রোতে ভেসে যাচ্ছে। এছাড়াও বর্তমানে টিভি, ভিসিডি প্লেয়ার বিক্রির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে এগুলো মেরামতেরও দোকান এর অভাব নেই। যাই হোক বর্তমানে এগুলো অসংখ্য গুনাহের অন্যতম মাধ্যম। মূলতঃ এর দ্বারাই আজ আমরা বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি বেহায়াপনা অশ্লিলতার মূল উৎস এটি। এর পাশাপাশি ডিস এন্টোনার ব্যবসাও অন্যতম তো এগুলি বিক্রি বা সংযোগ স্থাপন করে উপার্জন বৈধ বলে বিবেচিত হবে না বরং গুনাহের কাজে সহযোগীতা করার কারনে এরাও ক্ষতিগ্রস্থ হবে। অনেকে ভিডিও এডিটিং এর কাজ করে। বর্তমান যামানায় এটিও একটি জনপ্রিয় পেশা কিন্তু এই এডিটিং করতে গিয়ে আমরা একটি ভিডিও এর সাথে কি পরিমান গান মিশিয়ে এটি তৈরী করছি। এছাড়া একটি বিয়ের ভিডিও এডিটিং করতে গেলে কি পরিমান গায়রে মাহরাম মহিলাদের দেখতে হয়। সার্বিক বিচারে এই পেশাটি কি ক্রটিমুক্ত? আমি জানিনা আজ আমাদের কি হল আমরা আজ যে কোন পেশা গ্রহন করতে দ্বিধা বোধ করিনা। কিন্তু সাহাবীদের জীবনী দেখলে দেখা যায় তারা এতটাই সতর্ক ছিলেন যে অনেক সময় তারা অনেক হালাল পেশাও ছেড়ে দিতেন হারামের ভয়ে।
ছবি ও ভাস্কর্য
নবী করিম (সাঃ) গৃহে ছবি বা ফটো রাখতে নিষেধ করেছেন এবং আরো বলেছেন যে -কিয়ামতের দিন সবচে কঠোর শাস্তি হবে তাদের যারা ছবি তৈরী ও চিত্রাঙ্কন করে(বুখারী)। প্রকাশ্যভাবে প্রানীর ছবি ঘরে ঝুলিয়ে রাখা নিঃসন্দেহে হারাম। অথচ এই ব্যধি আজ ফ্যাশন হিসাবে পরিগণিত হয়ে গৃহের শোভা বর্ধনে ব্যাপকভাবে প্রকাশ পাচ্ছে। বড় আফসোসের সাথে বলতে হয় যে ছবি বা ফটোর কারনে ঘরে রহমতের ফিরিশতা প্রবেশ করে না আজ সেই ছবি সযন্তে আমরা মুসলমান ঘরের গুরুত্বপূর্ন স্থানে সুচারুরুপে স্থাপন করছি। এটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও বড় গুনাহের কাজ। কিয়ামতের দিন চিত্রকর তার চিত্রিত ফটোতে প্রানের স্পন্দন না জাগানো পর্যন্ত জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে না, যেহেতু নিষপ্রান জড় পদার্থে সে কখনও প্রান সঞ্চারিত করতে পারবে না তাই কোন আলিম এই হাদিসের আলোকে বলেন যে চিত্রকর ও প্রকাশ্যে ছবি স্থাপনকারী সদা সর্বদা জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে থাকবে, কখনও জান্নাতে যেতে পারবে না (ফতহুল মারাম)।
যা হোক বর্তমানে অনেক মানুষ এই চিত্রাঙ্কন পেশার সাথে জড়িত। অহরহ তারা বিভিন্ন প্রানীর ছবি অঙ্কন করছেন। এছাড়া ছবি তোলা পেশার সাথেও অসংখ্য মানুষ জড়িত। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আছে যারা এই চিত্র অঙ্কন এর প্রশিক্ষন দিয়ে থাকে। কিভাবে একটি মানুষের ছবি অঙ্কন করতে হয় তা এখানে খুবই চমৎকারভাবে শিখানো হয়। হুবুহু একজন মানুষের ছবি তারা অঙ্কন করে। এই ব্যাপারে উপরোক্ত হাদিস বাদেও অসংখ্য হাদিসে বিষয়টি হারাম ঘোষনা এবং কঠোর আযাবের কথা উল্লেখ রয়েছে। প্রানীর চিত্রাঙ্কন পেশাটিও যে হারাম এ ব্যাপারে কারও কোন দ্বিমত নেই। যে শিক্ষা দিল এবং যে অঙ্কন করল দুজনেই হারাম কাজ করল। আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই জঘন্য পেশা থেকে বেঁচে থাকার তাওফীক দান করুন। কারন এই সব প্রানীর ছবি যে ঘরে থাকবে সে ঘরে রহমতের ফিরিশতা প্রবেশ করবে না। হযরত আবু তালহা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করিম (সাঃ) বলেছেন - ফিরিশতা সেই ঘরে প্রবেশ করে না যে ঘরে কুকুর থাকে এবং সেই ঘরেও না যাতে থাকে ছবি (মিশকাত)। আরেকটি বিষয় অত্যন্ত দুঃখজনক বেদনাময়। মুসলিম উম্মাহ আজ ব্যাপকভাবে মূর্তিপূজায় জড়িয়ে যাচ্ছে। আজ মুসলমানদের ঘরে ঘরে বিভিন্ন রকম মূর্তির সয়লাব। মুসলমান আজ এই মূর্তি বানানোর ব্যাপারেও পিছিয়ে নেই। যে মূর্তি রাসূল (সাঃ) খানায়ে কাবা থেকে বের করে দিয়েছলেন তা আজ প্রকাশ্যে প্রবেশ করছে আমাদের ঘরে আমরাই তা আজ আগ্রহের সহিত নিজেদের ঘরে ্‌েটনে এনেছি। মুসলমান আজ হাদিয়া উপহার এর জন্য শোপিস এর নামে এই মূর্তিই সানন্দে গ্রহন করছে। অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান আছে যারা শুধুমাত্র এই শোপিস বিক্রি করে। বিভিন্ন পাথরের মূর্তি থেকে শুরু করে হরেক রকমের পুতুলসহ বিজাতীয় সংস্কৃতির জিনিসপত্র এখানে বিক্রি হয়। যা সম্পূর্ন হারাম। এছাড়াও বিজাতীয় সংস্কৃতির ক্রুশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম গহনাও বিক্রি হয়। আজ মুসলমান অবলীলায় এই সব ক্রুশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম অদ্ভুদ লকেট গলায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঙ্গে পরিধান করে যা ঈমানের প্রতি প্রচন্ড হুমকি আলী ইবনে আবী তালেব (রাঃ) বলেন- নবী করিম (সাঃ) একটি জানাযায় উপস্থিত ছিলেন, তিনি তখন বললেন তোমাদের মধ্যে কে আছে, যে মদীনায় যাবে এবং যেখানেই কোনো মূর্তি পাবে তা ভেঙ্গে ফেলবে, যেখানেই কোনো সমাধি সৌধ পাবে তা ভুমিসাৎ করে দিবে এবং যেখানেই কোনো চিত্র পাবে তা মুছে দিবে। আলী (রাঃ) এই দয়িত্ব পালন করলেন। ফিরে আসার পর নবী (সাঃ) বললেন- যে কেউ পুনরায় ওই সব বস্তু তৈরী করবে সে মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রতি নযিলকৃত দ্বীনকে (আহমাদ)। আজ আমরা অবলীলায় এই সব বস্তু তৈরী করছি এবং বিক্রি করছি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই জঘন্য পেশা থেকে হেফজত করুন।
বিউটি পার্লার এবং সেলুন
আজকাল আরো একটি জনপ্রিয় পেশা হল বিউটি পার্লার এবং সেলুন। বর্তমানে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত এসি পার্লার এবং সেলুন বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠেছে। বর্তমানে পার্লার এবং সেলুন ছাড়া কোন একটি এলাকা কল্পনাই করা যায় না। কিন্তু এই পার্লার বা সেলুন এর নামে আমরা কি কাজ করছি তা কি কখনো ভেবে দেখেছি। ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ন হুকুম হল দাড়ি রাখা। এটি বিভিন্ন দিক দিয়ে গুরুত্ববহন করে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে এটি আমাদের মুসলিম পরিচয়ের বাহক। এ ব্যাপারে আমাদের উপরতো ওয়াজিব হুকুম রয়েছে এবং অন্যদেরকেও এ ব্যাপারে তাগিদ দিতে হবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক আজ আমরা নিজেরাতো দাড়ি রাখিই না বরং অন্যদেরকেও না রাখার ব্যাপারে উৎসাহ দেই। অনেকেতো কেউ দাড়ি রাখলে খুবই কটুক্তি করে। যা হোক যেহেতু দাড়ি রাখা ওয়াজিব এবং এটা কাটা কোন ক্রমেই জায়েজ নেই সেহেতু এই হারাম কাজে সহযোগীতা করা এবং এ থেকে অর্থ উপার্জন করা কোনভাবেই জায়েজ নেই। এছাড়াও বর্তমানে যেভাবে চুল কাটা হয় তা শরীয়ত সম্মত নয়। বরং বিধর্মীদের অনুকরন করে যেভাবে চুল কাটা হয় তা খুবই গর্হিত কাজ। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মাথায় চুলের কিছু অংশ মুন্ডন করে কিছু অংশে চুল রাখতে নিষেধ করেছেন(মুসলিম)। আর এভাবে চুল কেটে অর্থ উপার্জনও জায়েজ নেই। অনুরুপভাবে যারা বিউটি পার্লারে কাজ করে তারাও ব্যাপকভাবে গুনাহের কাজে লিপ্ত। পার্লারে যেসব কর্মকান্ড হয় তার কোনটাই জায়েজ নেই। চুল কাটা,ভ্রু প্লাগ করা,পরচুল ব্যবহার থেকে শুরু করে সর্ব রকম কর্মকান্ড হয়ে থাকে। যা খুবই গুনাহের কাজ। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ (সাঃ) পরচুলা ব্যবহারকারিনী, তা প্রস্তুতকারিনী, উল্কি অঙ্কনকারিনী এবং যে নারী উল্কি অঙ্কন করায় তাদের সবাইকে অভিসম্পাত করেছেন। (বুখারী,মুসলিম) উপরোক্ত হাদিসে উল্কি অঙ্কনকারীদেরকেও অভিশাপ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে অনেক পুরুষ ও মহিলা রয়েছে যারা তাদের শরীরে উল্কি অঙ্কন করায়। যা বিধর্মীদের অনুকরনীয় কাজ। বর্তমানে মুসলমানদের অবস্থা এমন হয়েছে যে তাদেরকে দেখলে বোঝাই যায় না যে তারা মুসলমান কিনা? পুরুষরা মহিলাদের অনুকরন করছে আর মহিলারা পুরুষদের অনুকরন করছে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নারীদের বেশধারনকারী পুরুষ এবং পুরুষের বেশধারনকারী নারীদের প্রতি অভিসম্পাত করেছেন। (বুখারী) আজ মহিলারা চুল কেটে প্যান্ট পড়ে পুরুষদের বেশ ধারন করছে। হযরত আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক মহিলা নবী করিম (সাঃ) কে বলল ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার কন্যার বসন্ত রোগ হয়েছে উঠে গিয়েছে আর আমি তাকে বিয়ে দিয়েছি, তার মাথায় কি পরচুল লাগাতে পারি? তিনি বললেন আল্লাহ তায়ালা পরচুলা ব্যবহারকারিনী এবং যে ব্যবহার করায় উভয়কে অভিসম্পাত করেছেন । বুখারী,মুসলিম) অন্য এক হাদিসে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসাউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেছেন, যেসব নারী দেহে উল্কি এঁকে নেয় আর যারা এঁকে দেয়, সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য দাঁত ঘর্ষনকারিনী এবং চোখের পাতা বা ভ্রুর চুল উৎপাটনকারিনী এবং এভাবে আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন আনায়ন কারিনীদের আল্লাহ্‌ অভিসম্পাত করেছেন। এক মহিলা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসাউদ (রাঃ) কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন যাকে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) অভিসম্পাত করেছেন আমি তাকে কেন অভিসম্পাত করব না আর এটা পবিত্র কুরআনেও আছে। আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেছেন, রাসূল তোমাদেরকে যা কিছু করতে বলেন তা তোমরা গ্রহন কর, আর যা বস্তু হতে বিরত থাকতে বলেন তা হতে বিরত থাক(সূরা হাশর,বুখারী,মুসলিম) কিন্তু অত্যন্ত কষ্টের ব্যাপার আজ আমরা, আমাদের মেয়েরা পার্লার ছাড়া একটা মুহুর্ত ভাবতে পারি না। কিভাবে আজ আমরা আমাদের নিজেদেরকে আল্লাহ ও রাসূলের অভিশাপ দ্বারা নিজেদেরকে অভিশপ্ত করছি। যা হোক উপরোক্ত বিশ্লেষন করলে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় যে উক্ত কাজ কোন ক্রমেই জায়েজ নেই আর উক্ত কাজ কারে অর্থ উপার্জনও জায়েজ নেই।
ভাগ্য গণনা
অনেকেই জানেন তারপরও একটি পেশার কথা বলছি তা হল ভাগ্য গণনা করা। ভাগ্য গণনা একটি মারত্মক গুনাহ। যা শিরক এর পর্যায়ভুক্ত। হযরত হাফসা (রাঃ) হইতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- যে ব্যক্তি গণকের (জ্যোতিষীর) কাছে যায় এবং (তার কথা সত্য মনে পোষন করে) তাকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করে তার চল্লিশ দিনের নামায কবুল করা হয় না। (মুসলিম,মিশকাত) অনেকে আমরা জ্যোতিষীর কাছে না গেলেও পত্র পত্রিকায় কিন্তু নিজেদের ভাগ্য যাচাই করতে আমরা ভুলি না। গায়েব একমাত্র আল্লাহ তায়ালা জানেন। তা মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। যারা এগুলো বলে আর যারা এগুলি সত্য মনে করে বিশ্বাস করল তারা কুফুরী করল। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- যে ব্যক্তি নক্ষত্র বিদ্যা বিষয়ে আল্লাহর বাতলানো (তিন) উদ্দেশ্য ব্যতীত (১। আকাশের শোভা বৃদ্ধির জন্য ২। জ্বিন শয়তানদের বিতাড়িত করার জন্য এবং ৩। পথ ভোলা পথিকদের দিক নির্ণয়ের জন্য) কিছুও শিক্ষা গ্রহন করেছে, সে বস্তুত যাদু বিদ্যার এক অংশ হাসিল করেছে। আর জ্যোতিষী হল প্রকৃতপক্ষে গণক,আর গণক হল যাদুকর আর যাদুকর হল কাফির। (রাযীন,মিশকাত) উক্ত হাদিস দ্বারা ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যায়। তো গণনা করে অর্থ উপার্জনও জায়িজ নেই। আর মুসলমান ভাই বোনদের প্রতি অনুরোধ দয়া করে গণান করাবেন না আর পত্রিকাতেও নিজের ভাগ্য যাচাই করে নিজের ঈমান নষ্ট করবেন না।
পোশাক তৈরী
বর্তমান মুসলমান পোশাকের দিক দিয়ে মারাত্মকভাবে বিজাতীয় সংস্কৃতির দিকে ঝুকে পড়েছে। বিশেষ করে মহিলারা যেসব পোশাক পরিধান করছে তা খুবই দৃষ্টিকটু এবং বেশ আপত্তিকর। আর এভাবে শরীয়ত বিবর্জিত পোশাক পরিধান করা যেমন নাজায়েজ তেমনি এই পোশাক তৈরী করাও নাজায়েজ। (বেহেশতী জেওর) তাই আমরা যারা আজ এই সব পোশাক তৈরী করছি (বিভিন্ন টেইলার্সও এর অন্তর্ভূক্ত)যারা বিক্রি করছি তারা একদিক থেকে যেমনি আমাদের মা বোনদেরকে অর্ধউলঙ্গ করে রাস্তায় নামাচ্ছি তেমনি অন্যদিক থেকে শরীয়তের দৃষ্টিতে উপার্জনও বৈধভাবে করছি না। আজ যদি আমরা এই পোশাক তৈরী এবং বিক্রি না করতাম তবে হয়তো আজ মুসলমানদের পোশাকের দিক দিয়ে এত অধঃপতন হত না। 

আইন পেশা
আরো একটি পেশা হল। বর্তমানে অনেকেই এই পেশার সাথে জড়িত। এটি অত্যন্ত জঘন্যতম পেশা। সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য করার নামই হল এই আইন পেশা। কি পরিমান মিথ্যা যে এই পেশায় বলতে হয় তা একমাত্র আল্লাহতায়ালাই জানেন। এই প্রসংগে মহান আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন,মিথ্যা কথাবার্তা পরিহার কর (সূরা হজ্জঃ ৩০) তিনি আরো এরশাদ করেছেন(রহমানের বান্দা তারা) যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না(সুরা ফুরকানঃ৭২) আর এই পেশায় মিথ্যা একটি সাধারন বিষয়। অত্যন্ত দুঃখজনক জিনা,খুন,চুরি,ডাকাতি থেকে শুরু করে সব রকম অপরাধের শাস্তি থেকে এরা মিথ্যা বলে অব্যহতি দান করিয়ে দিচ্ছে। হযরত আবু বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত - রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন- সবচেয়ে বড় পাপ কি আমি কি তোমাদের অবহিত করব না? আমরা বললাম হ্যা ইয়া রাসূলুল্লাহ তিনি বললেন আল্লাহর সাথে শরীক করা এবং পিতামাতাকে কষ্ট দেয়া। বর্ণনা কারী বলেন তিনি কথা সমূহ হেলান দেয়া অবস্থায় বলছিলেন। এরপর তিনি সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেন সাবধান! আর মিথ্যা কথা বলো না। তিনি এ কথাটা পুনঃ পুনঃ বলতে থাকলেন, এমনকি আমরা বললাম আহ! তিনি যদি চুপ করে যেতেন।(বুখারী,মুসলিম)এখানে কিছু পেশার কথা উল্লেখ করা হয়েছে যা অনেক মানুষ হালাল মনে করে থাকে। যা হোক আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে উল্লেখিত পেশা থেকে বেচে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

৩টি মন্তব্য:

  1. এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।

    উত্তরমুছুন
  2. লটারী,বন্ড,পর্দা, পোষাক,ভাগ্যগণনা, ছবি, গান,পার্লার,আইন পেশা এ সমস্ত ব্যাপারে নিষেধ মেনে চললাম।
    কিন্তু ব্যাংক?

    কিন্তু ব্যাংক ছাড়া কি প্রতিষ্ঠান আছে যা mass people er employment provide করে? এই বেকার মানুষেরা কি করবে?
    মানুষ কোথায় টাকা জমাবে?
    কিভাবে লেনদেন করবে?
    কিভাবে ঋণ পাবে?
    কিছু টাকা হাতে থাকা অবস্থায় যে রিটায়ার হল বা বেকার হল সে fixed deposit এর ওপর না চলে কি করবে?
    এই real life সমস্যার সমাধান কে দেবে?

    যতদিন এর সমাধান না হবে ততদিন যত উপদেশই দেয়া হোক না কেন, না চাইলেও এই পথেই হাটতে হবে।

    উত্তরমুছুন
  3. সালাম,
    প্রাইজবন্ড বিক্রি করে যে কেউ তার মূলধন ফেরত পায় , তাই সে ক্ষতিগ্রস্থ হয় না । লটারীর টিকিটের মত এটা একবার ড্র হবার পর বাতিল হয় না , সারাজীবন রেখে দেয়া যায় বা বিক্রি করা যায় । তাই এটা হারাম কিভাবে হলো ?

    উত্তরমুছুন

আরো দেখুন

Related Posts with Thumbnails