রবিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১২

ভন্ড দেওয়ানবাগীর কুফরী মতবাদ

নাম ও পরিচয়ঃ তার নাম মাহবুবে খোদাপিতা আব্দুর রশীদ সরকারবি-বাড়ীয়ার আশুগঞ্জ থানার বাহাদুরপুর গ্রামে তার জন্ম।  প্রাথমিক স্কুল শিক্ষার পর তালশহর কারিমিয়া আলিয়া মাদ্রাসায় লেখা পড়া করেন১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন¯^vaxbZvi পর সেনাবহিনীতে রিলিজিয়ার্স টিচার পদে চাকুরী করেনফরিদপুরস্থ চন্দ্রপাড়ার পীর মৃত আবুল ফযল সুলতান আহমদ তার পীর ও শ্বশুর।  প্রথমে তিনি ঢাকার অদূরে দেওয়ানবাগে ও পরে ঢাকার আরামবাগে একটি দরবার স্থাপন করেনতার তত্ত্বাবধানে কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়যেগুলোতে অনেক ইসলাম বিরোধী কথা বিদ্যমানতন্মধ্যে নিম্নে কয়েকটি তুলে ধরা হল-

১. তার মতে-মুক্তির জন্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা জরুরী নয়যে কোন ধর্মের লোক তার নিজস্ব অবস্থায় থেকে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আত্মসমর্পণ করে তাঁর বিধানমত নিজেকে পরিচালিত করতে পারে ১আটরশি এবং ভান্ডারী পীরের দাবীও এরূপ। (ইসলামী আকীদা ও ভ্রান্ত মতবাদ, পৃঃ ৪৭৯,৫০০) পক্ষান্তরে ইসলাম বলে- আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীত ধর্ম হচ্ছে ইসলামইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম আল্লাহর নিকট গৃহীত নয় এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির অন্য কোন পথ নেই
২. তার মতে-জান্নাত বা বেহেশতের কোন বাস্তবতা নেইপ্রভূর সাথে পুনরায় মিলনে আত্মার যে সুখ লাভ হবে, তাই শ্রেষ্ট সুখএরই নাম জান্নাত২পক্ষান্তরে ইসলাম বলে-আল্লাহ্‌ তাআলা হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করে বেহেশতে থাকতে এবং তথাকার ফল-মুল ভক্ষণ করতে দিয়েছিলেনসেখান থেকে তাঁকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়মিরাজ রজনীতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ¯^P‡¶ সপ্তম আকাশের উপর বেহেশত ও তাঁর নিয়ামতরাজি পরিদর্শন করে এসেছেনকুরআনের অসংখ্য আয়াত ও রাসূলের অসংখ্য হাদীছে আটটি ¯^Zš¿ বেহেশত ও তাঁর নেয়ামতের কথা উল্লেখ হয়েছেআহলে কিতাব ইয়াহুদী-খৃষ্টান সহ চৌদ্দশত বছরব্যাপী সমস্ত মুসলিম উম্মত এ ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করে আসছে
৩. তার মতে-জাহান্নাম বা দোযখের কোন বাস্তব অস্তিত্ব নেই; বরং আত্মার চিরস্থায়ী যন্ত্রণাদায়ক অবস্থাকেই জাহান্নাম বলা হয়৩পক্ষান্তরে ইসলাম  বলে-জাহান্নামের ¯^Zš¿ অস্তিত্ব বিদ্যমান এবং তার সাতটি স্তর রয়েছেমিরাজ রজনীতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জাহান্নাম ও তার মাঝে পাপীদের জন্য প্রস্তুতকৃত বিভিন্ন শাস্তি ¯^P‡¶ দেখানো হয়েছেকুরআন ও হাদীছে জাহান্নাম ও তার শাস্তির ব্যাপারে অসংখ্য বর্ণনা এসেছেইয়াহুদী-খৃষ্টান জাতি সহ সমগ্র মুসলিম উম্মত  এ ব্যাপারে একমত
৪. তার মতে-বেহেশতের হুর বলতে বুঝায়-মানুষের জীবাত্মা বা নফস্‌ (অর্থা মানুষের মন, যা মানুষকে পাপের প্রতি প্ররোচিত করে)৪পক্ষান্তরে ইসলাম বলে-বেহেশতবাসীদের চিত্তবিনোদনের জন্য চোখ জুড়ানো, মন ভুলানো, অপরূপ সুন্দরী, কামিনী, বাসিনী, আনতনয়না, সমবয়স্কা, পবিত্রা, চিরকুমারী তরুনী বহু সংখ্যক স্ত্রী দেওয়া হবেএ ব্যাপারে কুরআন-হাদীছে অসংখ্য বর্ণনা এসেছেইয়াহুদী-খৃষ্টান জাতিসহ সমগ্র মুসলিম উম্মত এ ব্যাপারে একমত
৫. তার মতে- হাশর বা পুনরুত্থান বলতে কিছু নেইমানুষকে তার ভাল-মন্দ কর্মের প্রতিফল দুনিয়াতেই দিয়ে দেওয়া হয়৫পক্ষান্তরে ইসলাম বলে-আল্লাহ্‌ তাআলা এক নির্দিষ্ট সময়ে এই পৃথিবীকে ধ্বংস করে দিবেনযেটাকে কুরআনের ভাষায়-কিয়ামত বলা হয়এর পর সমগ্র পৃথিবীকে একটি সমতল মাঠে পরিণত করে তাতে সমগ্র মানব-দানবকে জীবিত করে উঠানো হবেকুরআনের ভাষায়-একেই হাশর বা পুনরুত্থান বলা হয়এখানে ইহজীবনের কৃতকর্মের হিসাব-নিকাশ, পাপ-পুণ্যের ওযন ও তার ফলাফল শোনানো হবেতাওরাত ও ইঞ্জীলের নামে মাত্র অনুসারী ইয়াহুদী-খৃষ্টান সহ সমগ্র মুসলিম উম্মত এ ব্যাপারে একমত
৬. তার মতে-পুলসিরাত পার হওয়া বলতে জন্ম থেকে মৃত্যূ পর্যন্ত ঈমানের উপর কায়েম থাকা এবং ঈমানের সাথে মৃত্যূ বরণ করাকে বুঝায়৬পক্ষান্তরে ইসলাম বলে-জাহান্নামের উপর দিয়ে এক বিশেষ ধরণের পুল থাকবেযেটাকে কুরআনের ভাষায়-পুলসিরাত বলা হয়এর উপর দিয়ে হাশরবাসীকে পার হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবেজান্নাতীগণ সহজেই তা পার হয়ে জান্নাতে চলে যাবে এবং জাহান্নামীগণ তা থেকে পা পিছলিয়ে জাহান্নামে পড়ে যাবেকুরআন- হাদীছে তার সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছেইয়াহুদী-খৃষ্টান সহ সমগ্র মুসলিম উম্মত এ ব্যাপারে একমত
৭. অনুরূপভাবে দেওয়ানবাগী- মিযান, আমলনামা, কিরামুন কাতেবীন, মুনকার-নকীর, তাকদীর বা ভাগ্যলিপী ও ফেরেশতা ইত্যাদির বাস্তবতাকে A¯^xKvi করে প্রত্যেকটির এরূপ অদ্ভূত নতুন ব্যাখ্যা প্রদান করছেন, যা কুরআন-হাদীছের সুস্পষ্ট বক্তব্য এবং চৌদ্দশত বছরব্যাপী চলে আসা সমগ্র মুসলিম উম্মাহর ঐক্যমতের বিপরীত৭
৮. তার মতে-মানুষ মৃত্যূর পর পুনরায় দুনিয়াতে ভিন্নরূপ ধরে আগমণ করে৮এটা হিন্দু ধর্মের বিশ্বাসএকে তানাসূখ বা পূনর্জন্মবাদ বলা হয়ইয়াহুদী-খৃষ্টান ও ইসলাম ধর্মে এটা কষ্মিনকালেও সমর্থিত নয়কারণ এর দ্বারা কিয়ামত, হাশর, হিসাব-কিতাব, মিযান, পুলসিরাত, জান্নাত, জাহান্নাম, হুর-গিলমান, কবরের সুয়াল-জওয়াব এবং তার শাস্তি ও নেয়ামত সবই A¯^xK…Z হয়। 
৯. তার মতে-জিব্রাঈল বলতে অন্য কেউ নন; বরং তিনিই হলেন আল্লাহ্‌৯পক্ষান্তরে ইসলাম বলে- আল্লাহ্‌ পাক নুর দ্বারা একটি জাতিকে সৃষ্টি করেছেনতারা আল্লাহর চির অনুগততাদের সংখ্যা একমাত্র আল্লাহই ভাল জানেনপবিত্র কুরআনের ভাষায় এদেরকে মালায়িকা বলা হয়উর্দু-ফার্সী এবং বাংলা ভাষায় এদেরকে ফেরেশ্‌তা বলা হয়এদের মাঝে প্রধান হলেন- জিব্রাঈলতিনি নবীগণের নিকট আল্লাহর পয়গাম পৌঁছানোর দায়িত্ব সহ বিভিন্ন দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়ে থাকেনকুরআন- হাদীছে এটা অতি সুস্পষ্টইয়াহুদী- খৃষ্টানসহ সমগ্র মুসলিম উম্মত এ ব্যাপারে একমত
১০. তার মতে-সাধনার দ্বারা আল্লাহকে নিজের ভিতরেই খুঁজে পাওয়া সম্ভব, বাইরে কোথাও নয়কঠিন সাধনার মাধ্যমে আমিত্বকে সম্পূর্ণ বিসর্জন দিয়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভকারী সাধকের সাথে আল্লাহ এমনভাবে মিশে যান, যেমন চিনি দুধের সাথে মিশে একাকার হয়ে যায়তখন ঐ বান্দাকে আল্লাহ্‌ থেকে পৃথক করা মুশকিলসে আরোও বলেছে- কুরআনে আল্লাহ আমাদেরকে ধারণা দিচ্ছেন যে, তিনি আমাদের ভিতরে এবং অতি নিকটে অবস্থান করেন; কিন্তু আমরা এতই মুর্খ যে, তাঁর অবস্থান সাত আসমানের উপর বলে মনে করে থাকি১০পক্ষান্তরে ইসলাম বলে-আল্লাহ্‌ তাঁর আরশে সমাসীনআর আরশ হচ্ছে- জান্নাতুল ফিরদাউসের উপর এবং ফেরদাউস হচ্ছে আটটি জান্নাতের সর্বোচ্চ চুড়ায়আর জান্নাত হচ্ছে-সপ্তম আসমানের উপরইমাম আবু হানীফা (রহ.) বলেন-যে বলবে, আমি জানি না আল্লাহ্‌ কোথায়? সে কাফেরঅণুরূপভাবে যে বলবে, আমি জানি না আল্লাহর আরশ কোথায়? সেও কাফেরইসলামী আকীদা- বিশ্বাসের বিশ্ব বিখ্যাত কিতাব আকীদাতুত তহাবীর ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে আবিল ইয (রহ.) বলেন- আল্লাহ্‌ আরশে সমাসীন কথাটি এতই সুস্পষ্ট ও সুদৃঢ় যে, এর ¯^c‡¶ হাজারেরও বেশী দলিল রয়েছেতবে সেই মহান আরশের ¯^iƒc এবং তাতে আল্লাহর আসীন থাকার ¯^iƒc অজ্ঞাত, মানব জ্ঞান তা সম্মক বুঝতে অক্ষম; বরং তা তাঁর শান অনুযায়ী হবে এবং এটাও আমাদের বিশ্বাস যে, তিনি আরশ বা অন্য কোন কিছুরই মুখাপেক্ষী ননআর সমগ্র সৃষ্টি জগ আল্লাহর নিকট এতই ক্ষুদ্র যে, তিনি তা নিজের হাতের মুঠোয় নিতে পারেনতাই তিনি সৃষ্টি জগতের সবকিছু দেখেন, শোনেন, জানেন এবং সর্বত্র তাঁর কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা বিরাজমান এবং মুমিনদের উপর সাহায্য ও রহমত বর্ষণ করেনএটাই হচ্ছে সাথে থাকার এবং সর্বত্র থাকার অর্থএর দ্বারা কখনো প্রকৃত সাথে থাকা উদ্দেশ্য নয় এবং তিনি কোন সৃষ্টির মাঝে প্রবেশ করেন না এবং সৃষ্টির সাথে মিশ্রিত হন না; বরং তিনি সৃষ্টি থেকে সম্পূর্ণ পৃথক ও ¯^Zš¿ এবং সঅস্তিত্বে অস্তিত্ববানএকমাত্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিরাজ রজনীতে আল্লাহর অতি নিকটে গিয়েছিলেন বলে হাদীছে পাওয়া যায়যে মর্যাদা অন্য কারোও ভাগ্যে জুটেনিআল্লাহ কোন সৃষ্টির ভিতর প্রবেশ করার কথাটি হিন্দুদের বিশ্বাসযেটাকে হুলুল বা অবতারবাদ বলা হয়অন্য ভাষায় একে অদৈত্ববাদ এবং সর্বেশ্বরবাদও বলা হয়, তাই তারা সবকিছুকেই খোদা মনে করে এবং তাদের খোদার সংখ্যা হচ্ছে তেত্রিশ কোটিইসলাম ধর্মে এটা কষ্মিনকালেও সমর্থিত নয়
১১. তার মতে-আল্লাহ্‌ ও রাসূলকে ¯^P‡¶ না দেখে ঈমান গ্রহণ করাতে কোন ফায়েদা নেইতিনি আরোও বলেন- কুরআন-কিতাব পড়ে আল্লাহকে পাওয়া যায় নাএকমাত্র পীরের হাত ধরে সাধনা করে আল্লাহকে পাওয়া সম্ভবএমনকি দুনিয়াতেই আল্লাহকে দেখতে পাওয়া যায়১১পক্ষান্তরে ইসলাম বলে-ইহজগতে ¯^P‡¶ আল্লাহকে দেখা সম্ভব নয়হযরত মুসা আলাইহিস সালাম তুর পর্বতে আল্লাহকে দেখার আপত্তি করেছিলেন; কিন্তু জাগতিক দুর্বলতা তাতে অন্তরায় হয়েছেআমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিরাজ রজনীতে আল্লাহকে ¯^P‡¶ দেখেছেন কি না ,এ ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরামের মাঝে মতভেদ রয়েছেসুতরাং দুনিয়াতে ¯^P‡¶ কেউ আল্লাহকে দেখতে পারে নাতবে ¯^‡cœ বা অন্তর চোখে দেখা যেতে পারে এবং পরকালে মুমিনগণ অবশ্যই আল্লাহকে ¯^P‡¶ দেখতে পাবেনএছাড়া ঈমান গ্রহণের জন্য আল্লাহ ও রাসূলকে দেখে সাক্ষ্য দিতে হবে, এমন কথা কুরআন-হাদীছের কোথাও নেই এবং সমগ্র মুসলিম উম্মাহ এ ব্যাপারে একমতদ্বিতীয়তঃ আত্মশুদ্ধির জন্য পীর ধরা জরুরী এবং ফরয পরিমাণ কুরআন-হাদীছের ইলম শিক্ষা করা তার চেয়েও বেশী জরুরী; বরং ফরযে আইনকারণ ইলম হচ্ছে আলোর ন্যায়আলো ছাড়া পথ চলা যায় নাআর পীর হলেন রূহানী চিকিসকতৃতীয়তঃ পীর হওয়ার জন্য অবশ্যই কমপক্ষে পাঁচটি গুণের অধিকারী হতে হবে। (১) তার আকীদা ও আমল কুরআন-হাদীছের মাপকাঠি অনুযায়ী হতে হবেফাসেক ফাজের হবেন নাসুন্নতের অণুসারী হবেনকোন প্রকার বিদআত করবেন না। (২) যুগের হক্কানী আলেমগণ তাকে সমর্থন করতে হবে। (৩) তিনি আরেকজন এরূপ পীর কর্তৃক অনুমতি প্রাপ্ত হতে হবেন, যার সিলসিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছেছে। (৪) তিনি অন্তত: হিদায়া শরীফ, জালালাইন শরীফ ও মিশকাত শরীফ-এই তিনটি কিতাব পড়ানোর যোগ্য হবেন এবং ছাত্ররা তার যোগ্যতার ব্যাপারে সাক্ষ্য দিবে। (৫) তার নিকট যাতায়াত দ্বারা অধিকাংশ মানুষের মাঝে আমলী পরিবর্তন আসাএছাড়া তার মাঝে দুনিয়াবী লোভ-লালসা প্রকাশ না পাওয়া ইত্যাদি
১২. তার মতে- আল্লাহর সাথে যোগাযোগ সব কলবেই হয়ে থাকেঅন্যভাবে হাজার চেষ্টা করেও আল্লাহ্‌কে পাওয়া যায় না১২পক্ষান্তরে ইসলাম বলে- বান্দা শরীয়ত পালনে আদিষ্টআর শরীয়তে পাঁচ ধরণের বিধান রয়েছে। (১) আকীদা বা বিশ্বাস সংক্রান্তযেগুলোর সম্পর্ক অন্তরের সাথে এবং এগুলো হচ্ছে ইসলামের মুল বিষয়কারণ আকীদা-বিশ্বাস সঠিক না হলে বাকী চার ধরণের বিধান পালন সব বেকার। (ইসলামী আকীদা-বিশ্বাসগুলো কী এবং তার গুরুত্ব কী? বিস্তারীত জানতে হলে-পড়ুন আকাইদ ও সুনান (নাদিয়াতুল কুরআন প্রকাশনী, চক বাজার ঢাকা থেকে প্রকাশিত)। (২) ইবাদত তথা নামায, রোযা, হজ্জ,যাকাত প্রভৃতি সংক্রান্ত। (৩) মুআমালাত  তথা ব্যবসা, চাকরী, কৃষি প্রভৃতি সংক্রান্ত। (৪) মুআশারাত তথা বৈবাহিক, পারিবারিক, সামাজিক প্রভৃতি আচার-আচরণ সংক্রান্ত। (৫) আখলাক বা চারিত্রিক গুণাবলী সংক্রান্তযেমন- বিনয়-নম্রতা, পরোপকার, দয়া, ক্ষমা, শিষ্টাচারিতা, ভদ্রতা প্রভৃতিতাসাওউফ বা আত্মশুদ্ধি এই পঞ্চমটিরই অন্তর্ভুক্তএই পাঁচ ধরণের বিধান পূর্ণরূপে পালনের মাধ্যমেই বান্দা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারেঅন্যথায় নয়সুতরাং এসব বিষয়ের বিস্তারিত ইলম শিক্ষা করাও ফরয
১৩. দেওয়ানবাগী নিজে হজ্জ করেননিতার মতে-তার উপর হজ্জ ফরয না হওয়ার কারণ হল- কাবা সর্বদা তার সাথে থাকে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা তার সাথে থাকেন১৩পক্ষান্তরে ইসলাম বলে-সামর্থবান ব্যক্তির উপর জীবনে একবার হজ্জ করা ফরযএটা ইসলামের পঞ্চভিত্তির একটিকুরআন-হাদীছে তা সুস্পষ্টরূপে প্রমাণীতরাসূল ¯^qs হজ্জ করেছেনসাহাবায়ে কেরাম হজ্জ করেছেনসমগ্র মুসলিম উম্মত এ ব্যাপারে একমত
১৪. তার মতে- সূর্য উঠা পর্যন্ত সাহরী খাওয়া যাবেআযান দেওয়া হয় নামাযের জন্যসাহরী খাওয়া বন্দের জন্য আযান লাগে না১৪পক্ষান্তরে ইসলাম বলে-সাহরী খাওয়ার শেষ সময় হল- সুবহে সাদিক তথা পূর্ব দিগন্তে সাদা আভা দেখা যাওয়া পর্যন্তযা সূর্য উঠার বহু আগেই হয়ে থাকেএ ব্যাপারে কুরআন-হাদীছে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছেসমগ্র মুসলিম উম্মত এ ব্যাপারে একমত
১৫. তার উক্তি-১৯৯৮ ইংরেজী সালে বিশ্ব আশেকে রাসূল সম্মেলনে আল্লাহ ও রসূল ¯^qs উপস্থিত হয়েছিলেনআল্লাহ ফেরেশতাদের নির্দেশ দিলেন-উক্ত সম্মেলনে উপস্থিত সমস্ত আশেকদের তালিকা তৈরী করতেতারা সবাই বেহেশতী১৫পক্ষান্তরে ইসলাম বলে- মানব জাতির মধ্যে একমাত্র নবী-রসূলগণ নিষ্পাপতাদের ঈমানের উপর মৃত্যূ হওয়া নিশ্চিততাই তাঁরা জান্নাতীআর নবী-রাসূলগণ যাদেরকে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন, তারা নিশ্চিত জান্নাতীএছাড়া অন্য কারোও ঈমানের উপর মৃত্যূ হওয়া নিশ্চিত নয়, তাই তাদের জন্নাতী হওয়াও নিশ্চিত নয় এবং নবী-রাসূল ছাড়া কেউ কাউকে জান্নাতী হওয়ার সুসংবাদ দিতে পারে না
১৬. তার দাবী- একদা এক বিশাল ময়দানে আল্লাহ ও সমস্ত নবী-রাসূল, ফেরেশতা এবং সমস্ত ওলীগণ একত্রিত হয়ে তাকে মুহাম্মদী ইসলামের প্রচারের দায়িত্ব দেনতথায় আল্লাহ, রাসূল এবং তিনি ও তার পীর চন্দ্রপুরী আগের সারিতে এবং বাকীরা সবাই পিছনের সারিতে ছিলেনতাদের সবাইকে নিয়ে আল্লাহ নিজেই মিছিল বের করেন- মুহাম্মদী ইসলামের আলো, ঘরে ঘরে জালো১৬পক্ষান্তরে ইসলাম বলে-আল্লাহ তাআলার আকার-আকৃতি, কথা-বার্তা,কাজ-কর্ম কোন কিছুই কোন সৃষ্টির সাদৃশ্য নয়অতএব আল্লাহ তাআলা কোন ময়দানে এসে মানুষের সাথে সারিবদ্ধ হওয়া এবং মিছিল দেওয়া তাঁর শানের খেলাফদ্বিতীয়তঃ আল্লাহ ও রাসূলের সাথে সে ও তার পীর এক সারিতে এবং অবশিষ্ট নবী-রাসূলগণ পিছনের সারিতে বলাতে বুঝায়- সে ও তার পীর মর্যাদায় আল্লাহ ও রাসূলের সমান এবং অন্যান্য সমস্ত নবী-রসূলের উর্ধ্বেতৃতীয়তঃ আল্লাহ ও সমস্ত নবী-রাসূলগণ মিলে তাকে মুহাম্মদী ইসলাম প্রচারের দায়িত্ব দিয়েছেনআর তিনি প্রচার করছেন- উপরোক্ত কুফরী বিষয়গুলোসুতরাং তার মতে উপরোক্ত কুফরী বিষয়গুলোই হচ্ছে মুহাম্মদী ইসলাম, যা হচ্ছে কুরআন-হাদীছ ও চৌদ্দশত বছরব্যাপী চলে আসা সমগ্র মুসলিম উম্মাহর ঐক্যমতের খেলাফ
উল্লেখ্য যে, কেউ কুরআন-হাদীছ দ্বারা প্রমাণীত সুস্পষ্ট কোন বিষয়কে A¯^xKvi করলে কিংবা তার ভিন্ন ব্যাখ্যা  দিলে সে কাফের হয়ে যায় এবং কাফের চিরকাল জাহান্নামে থাকবেআর কুফরী মতকে যারা ইসলাম বলে প্রচার করে, ইসলামের পরিভাষায় তাদেরকে যিন্দিক-কাফের বলা হয়তাদেরকে হত্যা করা মুসলিম সরকারের উপর ওয়াজিব। (তাফসীরে রূহুল মাআনী-১৬/১৯)
অবশেষে আল্লাহ, রাসূল ও পরকালে বিশ্বাসী সমগ্র মুসলিম  জাতির প্রতি আকূল আবেদন- তারা যেন উপরোক্ত বিষয়গুলো কুরআন-হাদীছের মানদন্ডে যাচাই করে সত্য ও সঠিক মতকে গ্রহণ করেন এবং মিথ্যা ও ভ্রান্ত মতকে বর্জন করেনপাশাপাশী ঈমানী দায়িত্ব হিসেবে সত্যের প্রচার-প্রসার ও মিথ্যার প্রতিরোধে এগিয়ে আসেনআমরা দেওয়ানবাগীর ন্যায় সকল রহস্যবিদ ও তাদের অনুসারীদের হেদায়েত কামনায় এই বিজ্ঞাপনটি উসর্গ করলামআল্লাহ্‌ আমাদের সকলকে সুমতি দিন
তথ্যসূত্র ঃ (১) আল্লাহ কোন পথে? ৩য় সংস্করণ, wW‡m¤^i ১৯৯৭ ইংরেজী,পৃঃ ১১৩, (২) ঐ-পৃঃ ৪০,(৩) ঐ-পৃঃ ৪৪, (৪) ঐ-ভূমিকা, (৫) ঐ-পৃঃ ৫৪, (৬) ঐ- পৃঃ ৬০, (৭) ঐ-পৃঃ ৫৭, ৬৮, ৬৯, ১২৮,১০৩, (৮) মাসিক আত্মার বাণী, ৫ম বর্ষ, ৬ষ্ঠ সখ্যা,পৃঃ ২৬ (৯) (আত্মার বাণী, ৫ম বষর্, ১ম সংখ্যা) বাতিল পীরের পরিচয়, কৃত মুফতি মুহাম্মদ শামসূল হক, পৃঃ ২২, (১০,১১, ১২,) ইসলামী আকিদা ও ভ্রান্ত মতবাদ, কৃত মাওলানা মুহাম্মদ হেমায়েতুদ্দীন, পৃঃ ৪৮৮-৪৮৯,(১৩) আল্লাহ কোন পথে? ২য় সংস্করণ,মে/১৯৯৭, পৃঃ ১৯২-১৯৩, (উল্লেখ্য যে, তৃতীয় সংস্করণে এ কথাটি বাদ দেওয়া হয়েছে) (১৪) মাসিক আত্মার বাণী, সংখ্যা- b‡f¤^i-99; পৃঃ ৯, (১৫) মাসিক আত্মার বাণী, সংখ্যা- b‡f¤^i-99,c„t ১০, (১৬) সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগ পত্রিকা, সংখ্যা-১২/৩/৯৯ শুক্রবার

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আরো দেখুন

Related Posts with Thumbnails