সোমবার, ৩০ আগস্ট, ২০১০

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের বোরকা বা ধর্মীয় পোশাক

সম্প্রতি সরকারি ও বেসরকারি কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য করা হচ্ছে এবং তাদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ায় বাধা দেওয়া হচ্ছে মর্মে সম্প্র্রতি কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয় এ পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আর তাতে যা বলা হয় তা নিম্নরূপ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের বোরকা বা ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য করা যাবে না। বোরকা না পরার কারণে কোনো ছাত্রীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। গতকাল বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে এ কথা বলা হয় এতে আরও বলা হয় সংবিধানের ২৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মানবাধিকার সংরক্ষণের লক্ষ্যে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এর আলোকে বোরকা না পরার কারণে কোনো ছাত্রীকে নির্যাতন বা হয়রানি করা যাবে না। পরিপত্রে আরও বলা হয় বোরকা বা ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য করা এবং ছাত্রীদের খেলাধুলা ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ায় বাধা দেওয়া অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করা হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান বা ব্যবস্থাপনা কমিটিকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষাসচিব সৈয়দ আতাউর রহমানের সই করা পরিপত্রে বলা হয় এসব বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে দপ্তর অধিদপ্তর বা শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
এতে বলা ছাত্রীদের সুশিক্ষা ও মেধা বিকাশের জন্য ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য করা এবং খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ায় বাধা দেওয়া কোনোক্রমেই কাম্য নয়
এ ব্যপারে কওমি মাদ্রাসা বোর্ড যে প্রতিক্রিয়া জানান তা হলো স্কুল-কলেজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় প্রয়োজনীয় নিয়ম করার সাংবিধানিক অধিকার কর্তৃপক্ষের উচ্চ আদালতের মাধ্যমে ইসলামি মূল্যবোধে আঘাত হানে। দেশের জনগণ কখনো মেনে নেবে না। বিবৃতিতে বলা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিসে বোরকা পরতে বাধ্য না করার বিষয়ে ২২ আগস্ট হাইকোর্টের রায়ের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় যে পরিপত্র জারি করেছে তা কোরআন সুন্নাহর পরিপন্থী প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের জন্য ইসলামি শরিয়তে পর্দা ফরজ। পর্দা আদায়ে নারীর জন্য বোরকা বাধ্যতামূলক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন বা পোশাক হিসেবে বোরকা বাধ্যতামূলক করে তাহলে তা বেআইনি নয় বরং ইউনিফর্ম স্কুলসূচি স্কুল-কলেজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় প্রয়োজনীয় নিয়ম করার সাংবিধানিক অধিকার কর্তৃপক্ষের আছে।
এ প্রসংগে অনলাইনে একটি পত্রিকার পাঠকদের প্রতিক্রিয়া দেয়া হয়েছিল। তা হল
বাংলাদেশে গনতান্ত্রিক সংবিধান চালু থাকা সত্তেও যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার নামে অসাংবিধানিক কাজ কর্ম করে যাচ্ছে কথা বার্তা বলে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কোন এ্যকশন নেন না সরকার এটা খুবই দু:খ জনক এদের বিরুদ্ধে রাষ্টদ্রহ মামলা হওয়া উচিত
বাংলাদেশ আফগানিসতান নয় মনে রাখা দরকার
এটা খুব হাস্যকর দাবি। এটা গণতান্ত্রিক দেশ। কেউ বোরকা আইনের বাপরে চাপ প্রয়োগ করতে পারে না। প্রত্যেকের বাক্তি সাধীনতা আছে।
তাদের কোনো অধিকার নেই নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলার।
যারা এই কথাগুলো বলেছে তাদের নিয়ে বলার কিছু নেই। কারণ তারা আল্লাহকে ভয় করে না আর তারা যেভাবে কথাগুলো বলেছে তাতে তারা নিজেদের মুসলমান দাবি করে কিনা তাতে সন্দেহ আছে। একজন মুসলমান নারী পর্দা করবে এটাই ইসলামিক আইন এবং তা সাভাবিক ব্যপার। এতে কিভাবে দেশ আফগান হলে গেল, গণতন্ত্র নষ্ট হয়ে গেল তা আমার জানা নেই। একটা ফরজ হুকুম নিয়ে মুসলমান কথা বললে মামলা হওয়া উচিত তা আসলেই দুঃখজনক।
যা হোক বর্তমান আইন সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও তা যে ইসলাম ধংসের সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা তা আমাদের বুঝতে হবে। আগামী কাল এ আইন যে  সকল ক্ষেত্রে জারি হবে না তার কি  নিশ্চয়তা আছে? কাল যদি এ আইন মাদ্রাসার ক্ষেত্রে জারি হয় তবে? যেখানে ধর্মপ্রাণ নারীরা পর্দার সহিত ধর্ম শিক্ষা করে।
পর্দা আল্লাহ প্রদত্ত আইন। যে এই আইন হেয় করে, লংঘন করে সে মুসলমান কিনা তাতে সন্দেহ আছে। আর হাদিসে রাসুল (স.) বলেছেন, দায়ুস জান্নাতে যাবে না। আর দায়ুস হলো সে, যে তার অধীনস্তদের পর্দা করতে বাধ্য করে না। আমরা যারা আখিরাতে বিশ্বাসী তাদের এই হাদিসে লক্ষ্য করা উচিত।
এখানে বাধ্য বলা হয়েছে। আফসোস এত কিছু করেও আমরা নিজেদের মুসলমান দাবি করি।
তাই মুসলমান ভাই বোনদের প্রতি আমার আবেদন আপনারা আল্লাহর হুকুম মানেন। আর এইসব থেকে দুরে থাকুন। আল্লাহকে ভয় করুন। কারণ প্রত্যেককেই একদিন মৃত্যুবরণ করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহিহ বুঝ দান করুন। আমিন

                                      লন্ডনের রাস্তায় মুসলিম মহিলা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আরো দেখুন

Related Posts with Thumbnails