রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১১

‘আল্লাহকেও একদিন বেঁধে আনবে মানুষ’

পাইকগাছার কপিলমুনি ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক অরুণকুমার সরকার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ক্লাস নিতে গিয়ে বলেছেন, বিজ্ঞান ও অবাধ তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় মানুষ চাঁদে বসবাসের আয়োজন করছে। ঘুরছে গ্রহ থেকে গ্রহান-রে। তথ্যপ্রযুক্তির বদৌলতে গোটা পৃথিবী এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। প্রযুক্তির এ অভাবনীয় অগ্রগতিতে শিক্ষাব্যবস্থারও উন্নতি ঘটছে দিনে দিনে, যা এক সময় মানুষের কল্পনাতীত ছিল, আজ তা বাস্তব। এমন এক সময় আসবে যে দিন আল্লাহকে পিঠমোড়া দিয়ে বেঁধে কপিলমুনি বাজারে নিয়ে এসে জিজ্ঞেস করবে- ‘তুই আমাদের অনেক জ্বালিয়েছিস, তোর কারণে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে, একপর্যায়ে তার কাছ থেকে ক্ষতি পূরণের অর্থও আদায় করবে এই তথ্যপ্রযুক্তি।’
ঘটনাটি গত ১২ অক্টোবর কপিলমুনি ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ক্লাস নিতে গিয়ে এমন উক্তি করলে ক্লাসের মধ্যেই শুরু হয়ে যায় হইচই। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতজনিত এমন কটূক্তিমূলক বক্তব্য প্রদান, তাও আবার একটি কলেজের ক্লাস নিতে গিয়ে করায় তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট শ্রেণীর ইসলাম ধর্মাবলম্বী ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকের এই মন-ব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। পরিসি'তি সামলাতে একপর্যায়ে শিক্ষক অরুণকুমার তাদেরকে শান- হতে বলে কথা ঘুরিয়ে বলেন, ‘তোমরা ঠিক আমার কথা বুঝতে পারনি। আমি বলতে চাচ্ছি, এমন এক সময় আসবে যখন মানুষের এসব কর্মকাণ্ডে আল্লাহ রোজ কেয়ামত ডেকে দেবে।’ তখন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, আপনি কেন আল্লাহকে পিঠমোড়া দিয়ে বাঁধার কথা বললেন? অবস'া বেগতিক দেখে শিক্ষক অরুণকুমার ক্লাস শেষ না করে বেরিয়ে যান। এরপর বিক্ষুব্ধ মুসলমান ছাত্রছাত্রীরা কলেজ ক্যাম্পাসে হইচই শুরু করে দেন। এ খবর তাৎক্ষণিক চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপকভাবে। শিক্ষকের এই ধৃষ্টতাপূর্ণ উক্তি শুধু শিক্ষার্থীদের মধ্যে নয়, আঘাত হানে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মনেও।
তিন দিন ধরে এ ঘটনা নিয়ে এলাকাজুড়ে চলছে তীব্র ক্ষোভ ও চাঁপা উত্তেজনা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক অরুণ সরকারের ০১৭১৯৭৬৭৯২৪ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে অন্য প্রান- থেকে এক ভদ্র মহিলা ‘তিনি বাড়িতে নাই’ বলে জানান। পরে কপিলমুনি কলেজ অধ্যক্ষ সহর আলী গাজীর ০১৭১২০৮৭৩০৮ মোবাইলে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার খবর তিনি শুনেছেন, তবে তিনি ক্লাসে কথাটি ঠিক ওইভাবে বলেননি। শিক্ষক অরুণ তাকে বলেছেন, জ্ঞান-বিজ্ঞানের যেভাবে অগ্রগতি হচ্ছে তাতে একসময় তারা আল্লাহকে খুঁজবে। পরে তিনি অরুণকুমার সরকারের হাতে মোবাইল ধরিয়ে দিয়ে কথা বলার কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘কথাটি সে দিন আমি এইভাবে বলিনি। আমি বলেছি, বিজ্ঞানের যেভাবে উন্নয়ন ঘটছে তাতে এমন এক সময় আসতে পারে, তারা আল্লাহকেও খুঁজবে এবং তাকে ধরে আনার চেষ্টা করবে কিন' পারবে না।’ তিনি দাবি করেন, ‘আমি সব ধর্মের অনুসারী। আমার ঘরে কাবা শরীফ, যীশু খ্রিষ্টের ছবি এবং নানান দেব-দেবীর ছবি আছে। তিনি বলেন, ছাত্ররা বিষয়টি বাড়িয়ে প্রচার করেছে।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আরো দেখুন

Related Posts with Thumbnails